খারাপ রাতের গল্প!





আজ রাতে নিঝুমম বৃষ্টি হচ্ছে। এইসব রাতের মুহুর্তগুলো খুব খারাপ! বৃষ্টি থেমে গেলেও অনেক সময় ধরে এর রেশ রেখে যায়। গাছের পাতাগুলো থাকে ভেজা, চুপসে যাওয়া। সাদা সাদা পেইন্ট করা বাড়ির দেয়ালে কিছুক্ষণ আগের বৃষ্টির চিহ্ণ লেপ্টে থাকে অনেক্ষণ। তিন তলায় এক কিশোরীর জানালার গ্লাসে বৃষ্টির আবছা একটা ঝাপসা ছাপ এখনো রয়ে গেছে।

একটা বয়ফ্রেন্ড থাকলে এখন যেকোন একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলা যেত নিশ্চিত। তার মনে আফসোস, কোন ছেলেই ধারে কাছে এইসকল জৈবিক ব্যাপারের রসায়ন নিয়ে ভাবে না। তারা পদার্থে-ই আটকে যায়। 
বয়স সবে ১৫। ক্লাস নাইনে পড়ুয়া ভীষণ মনোযোগী ছাত্রী। হলিউডি ফিল্ম দেখা এবং স্বভাবে বেশ ইমোশনাল হওয়ায় অনেক বড় বড় সেলিব্রেটির মোহ তাকে আচ্ছন্ন করে রাখে রাতের ঘুমোবার আগের সময়ে। হ্যান্ডসাম লৌহের ন্যায় শক্ত পেটানো শরীরের পুরুষের সাথে অভিসারে যাবার চিন্তা করতে করতে কোলবালিশটা জড়িয়ে ধরে ঘুমোয় সে। মাঝে মধ্যেই গভীর রাতে পড়াশুনা শেষ করে বেডরুমে মাস্টারবেট করাটা একটা অভ্যাস হয়ে গেছে ওর কাছে। পর্নহাব থেকে শখানেক নীল ভিডিও ডাউনলোড করে রেখেছে এনক্রিপ্ট করা ফোল্ডারে।
স্টাডির ফাঁকে ফাঁকে বোরিং লাগলে সে কানে হেডফোন লাগিয়ে এইগুলো দেখে।
একদিন ঘনিষ্ট মুহুর্তের নীলছবি দেখছিল মেয়েটি। এমন সময় থাই গ্লাস ভেঙে কেউ লাফিয়ে পড়লো একেবারে বেডরুমে। কানে হেডফোন লাগানো অবস্থায়ও কাচ ভাঙার শব্দ পেলেও সেটা ভিডিওর-ই মনে করে ইগনোর করে ফেললো উত্তেজনার দিকে মনোযোগ বেশি থাকায়।
হঠাৎ করে সে টের পায় তার কক্ষের টিউব-লাইট নিভে গেছে। তখনই ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে জীবনের প্রথম অনভিপ্রেত অবস্থার মুখোমুখি হলো।
চার চারটি ছেলে দেয়াল বেয়ে থাই ভেঙে তার বেডরুমে হামলে পড়েছে। ওরা চোখ মুখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধেই এসেছে। এইটা যে ভয়ানক একটা সিগনাল সেটা আন্দাজ করতে সেকেন্ড সময় লাগলো না। তার চোখে ভেসে ওঠলো রক্তাক্ত একটি লাশ, পত্রিকার ভেতরের পাতায় খবর ছাপা হয়েছে। ফেসবুকের টাইমলাইনে ভেসে ওঠেছে এক রক্তাক্ত কিশোরীর ছবি, বড় বড় করে ক্যাপশন- চার বন্ধু মিলে পাড়ার মেয়েকে রাতভর ধর্ষণ করে খুন!!
নাহ! অতো সময় কোত্থেকে পাবে বেচারি। মুহুর্তের মধ্যেই লম্বা চওড়া ছেলেটা বললো আমরা মধূর খোঁজে এসেছি। জোর করতে হবে নাকি নিজেই দিয়ে দিবি এইটা ক। রাইতের বেলা তোর শীৎকার শুনে আমরা একা একা খেচি।
- আমি বুঝতে পেরেছি আপনারা রেপ করবেনই। তবে আমি ভার্জিন না।
- মাগি কয়টার লগে শুইছিস? ক ত
আমার কোন ছেলে/মেয়ের সাথে এখনো শুয়া হয়ে ওঠেনি। বেশ ঠান্ডা মাথায় বললো মেয়েটি। আমি এখন চিৎকার দিলে হয়তো আমাকে খুন করতে পারবেন বড়জোর বাট রেপ করতে পারবেন না। আর আমি এই মুহুর্তে কি করছিলাম সেটা দেখতেই পাচ্ছেন। লুকিয়ে কোন লাভ নেই। আমি একজনের বেশি কারো সাথে করতে রাজি নই। আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলেন। আমি যাকে পছন্দ করব তাকেই শুতে হবে। বাকি চলে যেতে হবে। অন্য একদিন আসতে পারেন যদি আমি চাই। নইলে আমি চিৎকার করে বাবা মাকে ডাকব। পুলিশ কল হবে ঝামেলা হবে। এখুনি!

খুব নিঁখুতভাবে ঠান্ডা মাথায় কথাগুলো বললো মেয়েটা। চার ছেলে এ ওর দিকে চাওয়া-চাওয়ি করলো। পরে সবাই যার যার সিদ্ধান্ত নিল তারা রেপ করবে না। বাসা থেকে সেফলি চলে যাবে। কিন্তু সে দৃঢ়কন্ঠে বললো না, তা হবে না। আমাকে একজন অন্তত করুক। আমি এটাই চাই। এট লিস্ট একটা অপশন আমি দিচ্ছি। আপনাদের একজন হাত তুলেন। কে ইন্টারেস্টেড?

অবাক করে দিয়ে প্রত্যেক ছেলেই একই কাজ করলো। হাত তুলে নিজের পুরুষত্বের প্রমাণ কেউ-ই দিল না। তখন একটানে একজনের মুখের কালো কাপড় ধরে টান দিতেই বাকি তিনজন পালিয়ে গেল। লাফিয়ে পড়ার জন্য নিচে একটা নেট তারা প্লান করে রেখেই এসেছিল।

ছেলেটিও ওর হাত থেকে নিস্তার পেতে দৌড় দিয়েছিল। কিন্তু পেছন থেকে ওর টিশার্টে টান দিয়ে এবং পায়ে ল্যাঙ মেরে ফ্লোরেই আটকে দিতে সক্ষম হলো উন্মত্ত মেয়েটি। আঘাতপ্রাপ্ত হয় ছেলেটির বুকের হাড়। একটুর জন্য ভেঙ্গে যায়নি এই যাঃ। তীব্র ব্যাথায় সে কুকিয়ে ওঠলো।
ইউরোপ থেকে আনা পেইন কিলার ছিল তার ঘরেই। লাগানোর পর ছেলেটি অনেকটা সুস্থই হয়ে ওঠল বলা যায়।
এই রাতটা খুব খারাপ ছিল। একটানা সকাল পর্যন্ত বারবার পালা করে বৃষ্টি এসেছিলো!!
Share on Google Plus

গেম চেঞ্জার

বাংলাদেশ কে নিয়ে খালি স্বপ্ন দেখি না টুকটাক কাজও করি । মূলত যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ এক সত্ত্বা। ছড়া, কাব্য, গল্পে, ছবি, ভ্রমণে, বিশ্লেষণেও নিজেকে খুঁজে ফিরি।
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 টি তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন