গেমু ফিচারিংঃ গরু উপাখ্যান (ভিডিও সহ) {কেলাস থিরিতে টেরাই দিছিলেম, এক্ষণ আরেকবার। :-P }



✯ সূচনাঃ
The cow is a domestic animal. It has four legs, two eyes, two horns……………. (মনে পড়ছে? ছুডু বেলা??)

গরু একটি নিরীহ প্রাণী। ইংরেজিতে গরুকে কাউ বলা হয়। গরু এক প্রকারের গৃহপালিত রোমন্থক পশু। এটি বোভিডি পরিবারের বোভিনি গোত্রের অন্তর্গত। কোনো কোনো দেশ, যেমন ভারতে ধর্মীয় কারণে গরুকে গুরুত্ব ও মর্যাদা দেয়া হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি গরু রয়েছে। অতি প্রাচীন কালে মানুষ যখন সভ্যতার ছোয়া পায়নি তখন গরু ছিল মানুষের অতি প্রয়োজনীয় প্রাণী। এ বিজ্ঞানের যুগে মানুষ এখন অনেক সভ্যতার মধ্যে বসবাস করছে, কিন্তু এখনো গরু মানুষের অপরিহার্য প্রাণী।

এমনকি একজনের কথা শোনা যায় যে খালি এই রচনায় পারত। গরু গৃহপালিত জন্তু। তার দুটি চোখ, পড়েনা চোখের পলক, তার দুটি শিং, কি তার শিঙ্গের ঝলক, গাভী জ্ঞান হারায় মরে যায় বাঁচাতে পারেনা কেউ। একবার তাকে রচনা লিখতে বলা হয়েছিল বাংলাদেশের বন্যা। তার রচনা অবস্থা দাড়াল, বাংলাদেশে অনেক বন্যা হয়। বন্যায় সব কিছু তলিয়ে যায় সব গরু পালিয়ে যায়। বন্যায় গরুদের অনেক সমস্যা হয়। গরুর আছে দুটি চোখ, চারটি পা, দুটি শিং। কবি বলেছেন, আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে, বন্যার মাসে গরু পানিতে ডুবে থাকে। গরু গৃহপালিত জন্তু।


✯ বর্ননাঃ 
গরুর ৪ টি পা থাকলেও একটাও হাত নাই। না থাকলে কি হবে, একটা লেজ আছে না? ঐ লেজ দিয়াই সে কাম সেড়ে ফেলে। গরুর একটি টি নাক, দুইটি গাল, দুইটি চোখ, দুইটি কান, বেশ কটি দাত এবং লেজের আগায় ও নাকে কিছু চুল আছে। গরুদের চোখ কিন্তু খুব সুন্দর। তবে মন খুলে কাঁদতে পারে না। কারণ হলো তাদের সমাজে এখনো রুমাল/টিস্যু পিপার প্রচলিত হয়নাই। B-)) 
গরু মেরে জুতো দান বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। এটা মাঝে মধ্যেই ব্লগে চলতে দেখা যায়। সাধারণত ব্লগাররা ঝগড়ার শেষ পর্যায়ে ঝগড়াকে নয়ারুপ দিতে চাইলে এই কথা লিখে থাকেন। ;)

গরুর চারচারটি পা ঠিকই আছে, কিন্তু তাদের সংষ্কৃতিতে আমাদের মতো জুতা পরার সিস্টেম চালু হতে দেখি নাই। আমরা যেসকল জুতো পরি সেই টাইপের জুতো আজ পর্যন্ত কোনো গরুকেই কখনো জুতা পরতে দেখা যায় না। তা না থাকলে কি হবে? গরুদের শখ পূরণ করে দিয়েছেন কার্টুনিস্টরা। এই যে দেখুন। তবে এরা জুতা পরা শুরু করলে সেক্ষেত্রে ‘জোড়া’ শব্দটি চালু না হয়ে ‘হালি’ শব্দটি চালু হতে পারত। তখন গরুর খামারীরা জুতোর হালি কিনতে হতো। ;)



সাধের কি দেখছস রে ভাই বিচিত্র এ গেবনে!! মাইয়্যারা গরুর পায়ের স্টাইলের হাই-হিল জুতো পরা বাদ দিয়েছে বলে শোনা যায়নি। বিঃশ্বাস হয় না? তাইলে দেখেন। ;) ;)





গরুর মাথা থেকে পা পর্যন্ত খালি গোস্ত আর গোস্ত। পাছার গোস্তের দাম একটু বেশি হয়। তাই রানের মাংস বেশি দাম থাকলেও বুকের মাংস কিন্তু কম দাম হয়। 

গরুদের সাধারণত ৩ প্রকারে ভাগ করা যায়। বিরিশ গরু(অন্য নাম ডেকা) বেশি গরম হয় বলে নাকে নাফা লাগাতে হয়। গাভী গরু বাইচ্চা জন্ম দেয়। আর দুধ দেয় আর এইসব গাই গরু সাধারণত মাইয়া গরু হয়। বলদ গরু শান্তও হয় আর বেশি দামে বাজারে বিক্রি হয়। বলদা গরুর মানব সভ্যতা বিকাশে ব্যাপক অবদান আছে। এই যেমন মনে করুন আমাকেই ছোডুবেলা বাপে কইতো, "এই গরু, এইডা কি করছস??"।
গরু উপাধিতে আখ্যা পায়নাই এইরকম মানব পুত্র-সন্তান আছে আমার মনে হয় না। থাকলে থাকতেও পারে। তবে সেটা নিতান্তই অল্প।

আগে গরু ডাকলে, অবশ্য খুব মন খারাপ করে বসে থাকতাম অথবা কাজ-কর্ম(ইস্টাডি) অপ করে বসে থাকতাম। রাগ করে গাল ফুলিয়ে বসতাম। তখন মা অথবা দাদী আমার সহায় হইতেন। যাকগে, কি করতে কি শুরু করে ফেললাম। আপনারা আবার মাইন্ড খাইয়েন না।

যখন কোন বোকা মানুষ পেতাম তখন তাকে বোকা ডাইরেক্ট বলতে কিরাম জানি লাগে। তাই বন্ধুদের দেখাদেখি বলদ কিংবা বলদা বিশেষণ দিয়ে তাকে ভুষিত করে ফেলতাম। আহাঃ কি যে মজার সেই দিনগুলো।

আত্মরক্ষার্থে গরু দুটি শিং মাথায় নিয়ে চলে। তবে এই শিং নামক দুটি বিপজ্জনক অস্ত্র রাখার দায়ে কোনো গরুকে এ পর্যন্ত জেলহাজত কিংবা অন্য কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে শোনা যায়নি। যদিও ধারাল চাকু রাখার দায়ে মাঝে মধ্যেই ছাত্রদের হল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার রেকর্ড প্রচুর। তাছাড়া জালটাকার মেশিন পুকুর থেকে উদ্ধার করে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে যাবারও রেকর্ড আছে।
যাক সে কথা, গরু এই শিং দিয়ে কয়দিন আগেও কি করছে দেখবার চান? দেখেন-

✪ কুরবানীর গরুর দৌড়ান্তিঃ 

গরুদের বাস্তবে কোনদিন কুংফুগিরি করতে দেখা না গেলেও সিনেমার ডাইরেক্টররা ঠিকই গরুকে কুংফু কারাতে শিখিয়ে দিয়েছেন। কি? বিশ্বাস হয় না?? তাইলে দেখে নেন, গরুময় কুংফুঊঊঊঊউ ;) ;)
✪ কুংফু জানা গরুঃ 

গরুর মাথার ওপর হালকা পাতলা রঙিন কেশ থাকলেও বড় কোনো চুল নাই। এর মূল কারণ গরুরা ইচ্ছে করেই চুল বড় করে না। আজ পর্যন্ত কাউ পার্লার বলে কোন পার্লারের অস্তিত্ব যেহেতু আমরাই পাই নাই সেহেতু গরু চুল বড় করে ইস্টাইল করবো কোত্থেকে???
যাকগে, গরুর চারটি পা আছে তবে হাত নাই একটিও। এর বদলে একটি লেজ আছে। তবে তারা লেজে কিছু চুল রাখে। এ চুলের একটা ভাল গুণ আছে। বিরক্তিকর মশা কিংবা মাছি বসা মাত্রই যাতে বাড়ি দিয়ে ত্রিভূবন দেখাতে পারে। এছাড়া অবৈধভাবে কেউ দুধ চুরি করতে এলেও লেজ দিয়ে মুখেচোখে লেজাঘাত করতে পারে। :-P 

একদা গরু সম্প্রদায় জঙলে বাস করত। মানুষ তাদের কয়েক প্রজাতিকে লোকালয়ে ধরে আনার পর থেকে গ্রামের বাঢ়িতে গরুঘরে(একদা গোয়ালঘর) থাকত। এখন অবশ্য সেখানেও আর থাকে না। গরুরা এখন দলবেঁধে খামারে বাস করে। সবাই মিলেমিশে দুধ দেয় ও ঘাস খায়।
যদিও তারা এখন উন্নত ঘরে থাকে তারপরও গ্রামের গরুদের গরুঘরে বেঁধে রাখা হয়। এ নিয়ে তাদের কোন চিন্তাভাবনা লক্ষ্য করা যায়নি তবে আপনি যদি গরুর মালিক হোন এবং এদের বাইরে উঠোনে রেখে দেন তবে চুরি হলে কিংবা বাঁধা গরুটি চম্পট দিলে যাবতীয় দায়দায়িত্ব আপনি বহন করবেন।

আজ পর্যন্ত স্বেচ্ছায় বাংলার কোন গরুকে গাড়িতে উঠে চলাফেরা করতে দেখা যায়নি। তবে প্রতি ঈদের সময় দলবেঁধেই তারা ঢাকার রাজপথে পিকআপ/ট্রাকে চড়ে যাতায়াত করে থাকে। সাধারণত গরুরা হেঁটেই চলাফেরা করতে সুবোধ পায়। এর কারণ হতে পারে তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা।
আশা করছি বুঝতেই পারছেন কোন কারণটির কথা বলছি? যদি না ঢুকে থাকে মাথায় তবে গরুগিরি আপনার মাথায় হালকা পাতলা আছে সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হই্ত্তারেন।
তাইলে শুনেন, গরগণের ভুরি থাকে বিশাল সাইজের। তাঁরা নিশ্চয়ই ভেবেছেন, এমনিতেই তো বিরাট ভুড়ি। তার উপ্রে যদি হাঁটাচলা না করি তাহলে তো ভুড়ি নিয়া চলাফেরাই পরে দায় হয়ে পড়বে।

গরুকে মাঝে মধ্যেই ভীষণ হিংসে হয়। গরু মহাশয় আরামসে অর্ধশয়ন করে জাবর কাটতে কাটতে বাংলা ভাষার শ্রীবৃদ্ধিতে কত্তো যে বড় মাপের অবদান রেখেছে, তা হিসেব করে আপনি নিজেকে নিতান্ত 'গোবেচারা' ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারেন না। অথচ গরু স্কুল-কলেজের সিঁড়ি না ভেঙেই বাংলা ভাষাকে 'গোবেচারা' নামের কান লাল করা বিশেষণটি উপহার দিতে পেরেছে। যখন 'গোমূর্খ' বলা হয়, তখন কিন্তু গরুর স্ট্যাটাস আপনার উপ্রেই থাকে। 

গরুকে নিয়ে জ্ঞানী মুর্খদের একটাই অপবাদ। আর তা হচ্ছে 'গরু তো গরুই'। সো হোয়াট? চাঁদেরও কলঙ্ক থাকে। কি ভুল বললাম??

বাংলা ভাষার প্রবাদ-তোরঙ্গটি খুলুন। দেখবেন, ওখানে লেখা আছে হাজার রকমের গরু-বন্দনা। 'গোণা গরু বাঘে নেয় না', 'গাই নাই তো বলদ দুয়ে দে', 'গাঁয়ের গুণে গরু বিকায়', 'গাই ছিল না হল গাই, চালুনি দিয়ে দুইতে যাই', 'গাছে গরু চরানো', 'কানা গরু বামনকে দান', 'গোকুলের ষাঁড়', 'গোবর গণেশ,' 'কানা গরুর ভিন্ন মাঠ', 'কুঁড়ে গরুর এটুলী সার', 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়' ইত্যাদি হাজারো প্রবাদ বাক্য তো গরুই বাংলা ভাষাকে দান করেছে। 'চিনির বলদ' আর 'কলুর বলদের' কথা নাহয় নাইবা কইলাম। B-)) 
মেয়ে/মহিলা গরুকে গরু সম্প্রদায়ের পরিভাষায় বলা হয় গাই। তাদের সম্মানার্থে বাংলাদেশের একটা জেলারও নামকরণ করা হয়েছে(গাইবান্ধা)।
Cow থেকে Coward আসে। কাজেই কাউকে Coward বললে গরুজাতি তেমন মাইন্ড করেনা। Holy Cow বা পবিত্র গরু হচ্ছে একটা এক্সপ্রেশন যেটা অবাক হলে আমেরিকানরা বলে থাকে।

এখন কি কারো সন্দেহ আছে বাংলা ভাষাসহ অন্যান্য ভাষায় গরুর অবদান নিয়ে? খোদ কবিগুরুর গো-বন্দনার উদাহরণঃ
'শুভ্র খন্ড মেঘ 
মাতৃদুগ্ধ পরিতৃপ্ত সুখনিদ্রারত 
সদ্যোজাত সুকুমার গোবৎসের মতো 
নীলাম্বরে শুয়ে..


✪ গরুরা মাঝে মধ্যে ভ্যাংচি-ও যে কাটে এর প্রমাণ দেখতারেন-



গরু জাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে মন্ত্রীসভায়ও ঠাই পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি বিরোধিদলেও। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই কবে থেকে গরুর বিচরণ তা কি আর বলতে হয়??? গরু বিবর্তন তত্ব বিশ্বাস হয় না?? নিচের পোস্টে ক্লিকানঃ ;) ;)
বানর থেকে নয়,বিবর্তনের মাধ্যমে গরু থেকে হয় মানুষ!

✪ চলচ্চিত্রে গরুঃ
গরু বাংলাদেশি চলচ্চিত্রেও তার অবদান রাখতে বাকি রাখে নি। চিন্তা করে দেখেন, লাল জামা নিয়া নায়িকা বিপদে পড়ার পর, নায়ক এসে কৌশলে উদ্ধার করার ঘটনা কিংবা ইলিয়াস কাঞ্চনের গরু নিয়ে হাল বাওয়া কি গরু ছাড়া সম্ভব ছিল?? কিছুদিন আগেও বাংলা চলচ্চিত্রে গরুদের একক কর্তৃত্ব ছিল। বর্তমানে সৃজনশীল কয়েকজন এসে জুটায় তারা মোটামুটি দুরে আছে। বর্তমানেও এদের বিচরণ বাংলা চলচ্চিত্রে লক্ষ্য করা যায়।

✪ গরু নিয়া গানঃ (গরু তুই মানুষ হইলিনা)  


✯ উপকারিতাঃ
গরু আমাদের চারপাশের ঘাস, লতাপাতা খেতে গিয়ে শাকসবজিও খেয়ে ফেলে। ফলে আমাদের বাড়িতে কেউ শাক রান্না করতে চাইলেও করতে পারেন না। এতে বিরাট বাঁচা বেঁচে যাই আমরা। শাক খেতে যা বিশ্রী লাগে! 
গরুর গোবর এবং পিশাব জমিকে উর্বর করে তুলতে অবদান রাখে। দেশের জনসংখ্যা কমাতেও সাহায্য করে। কারণ গরুর গোস্ত খেয়ে হার্ট এটাক, ইস্টোরুক, এলার্জি হয়ে মানুষ মারা যাওয়ার যথেষ্ট উদাহরণ আছে।
এমনিতে খালাতো/মামাতো/ফুফাতো/চাচাতো/তালতো/…..তো বোনের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কোরবানির ঈদে গরুর মাংস দিয়ে আসার ছুতোয় আমরা সহজেই দেখাটা করে ফেলতে পারি। 

✯ অপকারিতাঃ
গরুর কিছু অপকারী দিকও আছে। গরু নামে পৃথিবীতে একটা প্রাণী আছে বলেই শিক্ষকেরা আমাদের গরু বলে সম্বোধন করেন। যা অতিশয় মর্মবেদনাদায়ক। গরু খানিকটা বেয়াদব কিসিমের প্রাণী। কারণ সে কোনো রকম আদব-কায়দার ধার না ধেরে মাঝেমধ্যে এমন জোরে লাথি মারে যে নিজেকে তখন মনে হয় ফুটবলজাতীয় একটা কিছু। বিষয়টা একটু লজ্জাকর বৈকি।

ছোটবেলায় বেলদা একবার লাল লুঙ্গি পড়ে পাঠশালায় যাচ্ছিল। কিন্তু পথের মধ্যে একটি ষাঁড় তাকে পিছন থেকে ধাওয়া করে, শেষমেষ প্রাণ রক্ষার্থে বেলদা নর্দমার কূপ জলে ঝাঁপ দেয়। সেই থেকে যে বেলদার মনে গরুর প্রতি ভীষণ ভয় ঢুকেছে তা আর গেলো না।

কয়েকদিন আগে কই জানি পড়লাম (ইত্তেফাক এর ফান ম্যাগাজিন) গরু নাকি ইভটিজিং করেনা!! ডাহা মিত্থ্যা কথা। গরু খালি ইভটিজিং করেনা। ডাইরেক্ট রেপ করে। কুনু লাজশরম এইসব গরুদের থাকে বলে মনে হয় না। পিরমাণ এই যে ফেবু ইসটেটাসে-

✪ গরু ফেবু ইসটেটাসঃ
গত বছরের কোরবানির গরু কিনার কাহিনী। হাট এ গিয়া ৪৫০০০ টাকা চাইল। কালো রঙের গরু কিনলাম ৩০,৫০০ দিয়ে। গরু এর চরিত্র আমার থেইকাও খারাপ। তাকে আনার সময় আশেপাশে যে কয়টা গরু পাইসে তার সব গুলার সাথে সে আকাম কুকাম করার চেস্টা করসে। এইরকম লম্পট গরু জীবনে দেখিনাই। এর মধ্যে মাঝপথে এক গরুর উপর সে উইঠা গেল। তাকে আর নামানোই যাইতেসেনা। যার গরুর উপর সে উঠসে সেই গরুর মালিক বেচারা ভদ্রলোক কাউকে কিছু বলতেও পারতেসেনা কিন্তু মুখ দেখে মনে হচ্ছে সহ্যও করতে পারতেসেন না। কি বলবেন? নিজের গরু রেপ হইলে তো আর বংশের উপর কলঙ্ক আসেনা কিন্তু তারপরেও নিঃসন্দেহে অপমানজ়নক ব্যাপার। আমার গরুর লোক এবং ওনার গরুর লোক চেস্টা করতেসে গরু-রেপ ঠেকাইতে। আশেপাশের রিকশার লোকজন দেখি বেশ উপভোগ করতেসে। একজন আমার গরুকে বলল, "তুইও পুরুষ ঐটাও পুরুষ, তাও এমন করস ক্যান" !! কথাটা তো ভাল বলসে!! গে-গরু (homo-sexual cow!!) কিনলাম নাকি!! গরু নিয়া আসতেসি, আমি সামনে, পিছনে গরুর দুই লোকের সাথে গরু। তখনও ঐ লোকের কথাটা মাথায় ঘুরতে লাগল, তুইও পুরুষ, ঐটাও পুরুষ। আমিও (লেখক) তো পুরুষ। আমার গরুর সামনে এখন আর কোনো গরু নাই। শালার পুত আবার আমারেই গরু না মনে করে!! গরুর লোকগুলারে বললাম, আই তোমরা গরু নিয়ে সামনে যাও। আমি পিছন পিছন আসতেসি। চরিত্র খারাপ মানুষ হোক আর গরু হোক ,কোনো কিছুতেই বিশ্বাস নাই। দুইটাই বেকায়দা। 

✯ উপসংহারঃ
গরুরা অনেক আলোচিত জাতি। ব্লগে যেমন আলোচিত অংশ বলে একটি ব্যাপার আছে তেমনি ফোকাসে না আসা আলোচিত প্রাণি কিন্তু গরু। নিচে একটা বাচ্চার লেখা গরু বিষয়ক রচনাটি পড়ুন।-



ভারতে গরুদের রক্ষার্থে সে দেশের মানুষেরা বেশ তৎপর থাকে। এই যেমন উদাহরণস্বরুপঃ-
গরু বিতর্কে মোদিকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়ঃ
ভারতে গরুর গোশত নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএল’ হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এ বিষিয়টি প্রকাশ্যে আসায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) মিডিয়া সূত্রে প্রকাশ, বেনামি পোস্টকার্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রিকারকে আইএসআইএল-এর নামে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।

গরু মারা গেলে আগে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হত। নদীর তীরে পৌঁছে নিম্নশ্রেণির লোকেরা ঢিল ছুড়তে থাকত মরা গরুর দিকে। যার হাতের ঢিল গিয়ে লাগত গরুর শরীরে, সে-ই গরুর চামড়ার মালিক হয়ে যেত। তারপর সেটা তীরে এনে চামড়া ছাড়ানোর উৎসব হতো। যাদের ঢিল গরুর গায়ে লাগেনি তারাও কেউ কেউ বলার চেষ্টা করত, আমার ঢিলটা আসলে গরুটার লেজে লেগেছে। কেউ আবার বলত, আমারটা লেগেছে গরুর পায়ে। ভাগ বসানোর ধান্দা আর কি! তবে প্রকৃত মালিকের দয়া হলে তাদের যৎসামান্য কিছু দেওয়াও হতো।
চামড়া ছাড়ানোর পর সেই গরুর ওপর এসে বসত শকুনের পাল। শুরু হতো তাদের মাংস খাওয়ার মহোৎসব।

[link|http://gamechangerbd.blogspot.com/2015/10/blog-post_73.html✪ গরু কোরবানীঃ]]
গরুর হাট গুলাকে বলা হত বিরাট গরু ছাগলের হাট যদিও সেটার নাম হওয়া উচিত ছিল গরু ছাগলের বিরাট হাট। বাড়িতে আনা শান্ত গরু আদর বেশি পেত। আর রাগী গরুর কাছে যাওয়াটা বিশেষ বীরত্বের ব্যাপার ছিল। 

পরিশেষে বলা যায়, গরুর ছোটখাটো অপরাধ থাকলেও প্রাণী হিসেবে গরু কিন্তু ভালোই। যে কারণে শুধু কোরবানির বাজারে নয়, কবিদের কবিতার বাজারেও গরুর ভালো একটা ডিমান্ড আছে। তাই তো জনৈক অখ্যাত কবি তার এক জবরদস্ত কবিতায় এভাবে রশি ধরে টেনে এনেছেন গরুকে—‘তুমি সাগর, আমি মরু/ছিলাম ছাগল, হলাম গরু।’
গরুর ঋণ আমরা কখনও শোধ করতে পারব না। সব গরু যেখানেই থাকুক, ভাল থাকুক এই প্রত্যাশায়......।

✪ শেষ করার আগে আগে গরুময় কিছু ছবিঃ






























✪ সবশেষে গরুময় কিছু ইউটিউবানঃ



























✯ গরু রচনায় সাহায্যঃ
গরু সাহায্য ১
গরু সাহায্য ২
গরু সাহায্য ৩
Share on Google Plus

গেম চেঞ্জার

বাংলাদেশ কে নিয়ে খালি স্বপ্ন দেখি না টুকটাক কাজও করি । মূলত যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ এক সত্ত্বা। ছড়া, কাব্য, গল্পে, ছবি, ভ্রমণে, বিশ্লেষণেও নিজেকে খুঁজে ফিরি।
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 টি তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন