আমার হৃদয়ে একটা জানালা ছিল।
একটা দরজাও ছিল।
জানালা দিয়ে আমি দেখতাম; লাল, নীল, হলুদ, বেগুনী, আসমানি রঙের স্বপ্নদের।
আঙিনায় গোল্লাছুট খেলত ওরা, তারাই রাঙিয়ে দিতে আকাশটা, শৈশবের হৃদয়ের;
হেসে কুটিকুটি হতো আমার পাগলামো দেখে।
সোহাগীনি মায়ের শাসন যখন মাঝে মাঝে কাঁদিয়ে দিত;
লবণাক্ত পানিরা চিবুকে এসে তখন হাসত, কেন যেন আমার কান্না হলেই তারা এসে হাসত;
বাবা, মামা, খালা খালু সবাই-ই হাসত।
কান্নাগুলোর সাথী হতো কেবল স্বপ্নরাই।
হৃদয়ের আঙিনায় এসে আমার সাথে কান্না করতো ওরা সবাই।
পরে বয়ে নিয়ে যেত দুঃখগুলো, কেবল তারাই।
ছুঁড়ে ফেলত মজা করে ছোট্ট ছড়ার সলিলে, ঢেউয়েরা আনন্দে নাকানি চুবানি দিত দুঃখগুলোকে;
আমার অশ্রুগুলো তখনো লেপ্টে রয়েছে গালে;
চোখের পাপড়িগুলোর উষ্ণতায় পানি ঢেলে
হাল্কা ফুরফুরে পাখি হয়ে, উড়াল দিয়ে আকাশে;
পৃথিবীর ভূবনে ফিরে পেতাম; আরেকবার, আমার নিজেকে;
অনবদ্য সেই আমি, তাক লাগিয়ে দিতাম সবাইকে।
ইদানিং, কেন যেন স্বপ্নরা আর আমার কাছে আসে না।
হৃদয়ের দরোজায় ধুলোবালি আর মরচে ধরে গেছে।
আমার হৃদয়ের জানালার পাখাগুলোতেও মরচে পড়ে গেছে।
ফুলের বাগানে একটা ফুলও ফুটছে না।
সবুজ পল্লবের পৃথিবীটাও কেমন যেন ধূসর হয়ে গেছে।
আকাশের নীল নীল মেঘগুলো অভিমান করে চলে গেছে নিযুত ক্রোশ দূরে।
পঙ্খীরাজের সপ্তবর্ণের পাখনাগুলো আর দেখতে পাই না,
ডানা ঝাপটিয়ে সে চলে গেছে দিকচক্ররেখা হতে বোধহয় আরো দূরে,
নীলাভ ঝাপসাময় দিগন্তের কুয়াশার ভেতরে। চোখের সীমানার বাইরে,
আরো দূরে; বহূ-দুরে। চলে গেছে।
বিঃ দ্রঃ কবিতাটি জুন আপার জন্য উৎসর্গ করা হলো
0 টি তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন