মহাবীর আলেকজেন্ডার (খ্রিঃপূঃ ৩৫৬ - খ্রিঃপূঃ ৩২৩) সম্পর্কে জানেন না এইরকম মানুষ খুব কমই দেখেছি জীবনে । আমাদের বাংলাদেশে উনাকে সিকান্দার বলে ডাকা হয় । উনি ছিলেন সারা পৃথিবীর শাসনকর্তা যেটা বললে অত্যুক্তি হবে না । উনার মতো শাসক সারা দুনিয়াতে কেউ ছিলেন না । অন্তত মানব ইতিহাস অনুযায়ী এটাই সত্য । আমি উনাকে নিয়ে বরাবরই আগ্রহী । যাইহোক মায়ের কাছে মামার বাড়ির গল্প বলে আপনার সময়গুলো কেড়ে নেবার চেষ্টা করছি না ।
তিনি যখন বুঝতে পারলেন সময় ঘনিয়ে আসছে । মৃত্যুশয্যায় যখন দেহ ও শক্তি ধীরে ধীরে ক্ষয়ে আসছে তখন তাঁর জেনারেলদের ডেকে বললেন, 'আমার মৃত্যুর পর আমার তিনটা ইচ্ছা তোমরা পূরণ করবে ।' কথাগুলি বলার সময় উনার কন্ঠ খুবই দুর্বল লাগছিল । মনে হচ্ছিল প্রচুর পরিমাণ শক্তি ব্যয় করে তাকে কথাগুলি ব্যক্ত করতে হচ্ছে । তাঁর তিনটি অসিয়ত বা মৃত্যুপরবর্তী ইচ্ছেগুলো -
♣ প্রথম অসিয়তঃ শুধু চিকিৎসকরাই আমার কফিন বহন করবেন ।
♣ ২য় অসিয়তঃ আমার কফিন যে পথ দিয়ে যাবে সেই পথে অর্জিত সোনা ও রুপা ছড়িয়ে থাকবে ।
♣ শেষ অসিয়তঃ কফিন বহনের সময় আমার দুই হাত কফিনের বাইরে ঝুলিয়ে রাখবে ।
জেনারেলগণ ভেবে পেলেন না কি করে সম্ভব এইসব বিচিত্র ইচ্ছে করছেন তাও দুনিয়ার এই মহাপ্রতাপশালী বীর । একজন অভিজ্ঞ সাকসেসরের প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে আলেকজান্ডার বললেন, 'আমি পৃথিবীবাসীর সামনে তিনটি শিক্ষা রেখে যেতে চাই।'
♣ আমার চিকিৎকদের কফিন বহন করতে এই কারনে বলেছি যে, যাতে লোকেরা অনুধাবন করতে পারে যে চিকিৎকরা মানুষকে সারিয়ে তুলতে পারে না। তারা নিজেরা ক্ষমতাহীন আর মৃত্যুর থাবা থেকে রক্ষা করতে অক্ষম ।
♣ পথে স্বর্ণ-মণিমুক্তো ছড়িয়ে রাখতে বলেছি কারণ এর একটা কণাও আমার সঙ্গে যাবে না। এগুলো পাওয়ার জন্য সারাটা জীবন ব্যয় করেছি কিন্তু নিজের সঙ্গে কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না। মানুষ বুঝুক এসবের পেছনে ছোটা মানে সময়ের অপচয়।'
♣ কফিনের বাইরে দুই হাত ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে বুঝানোর জন্য যে পৃথিবীতে আমি খালি হাতে এসেছি আর দেখো আজ পৃথিবী থেকে খালি হাতেই চলে যাচ্ছি ।
কিছু বুঝতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করবো ।
0 টি তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন