♣ মিশরের একজন ব্যবসায়ী দুবাইয়ের জুমিরা লেক টাওয়ারস থেকে ওঠেন এক ট্যাক্সিতে। নামার সময় দুটি ব্যাগ ফেলে যান । ওই দুটি ব্যাগে ছিল প্রায় দুই কোটি ৫২ লাখ টাকা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও মূল্যবান অলঙ্কার । বেচারা ড্রাইভার ঐগুলা পেয়ে নিজে বড়লোক হননি । ঠিকই পুলিশ স্টেশনে গিয়ে ওই টাকা আর অলংকার হস্তান্তর করেন । দুবাইয়ের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারাও তাকে পুরস্কৃত করেছেন। কৃতিত্ব স্বরূপ ‘দুবাই এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।
আপনি জানেন ? এই মামা আব্দুল হালিম আমাদের দেশেরই সন্তান ।
♣ অধুনা পদার্থবিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন যেখানে কাজ করতেন, নিক্লিয়ার ফিজিক্সের ওপেনহেইমার, এটম মডেলের নিলস বোর যেখানে কাজ করতেন সেই বিদ্যাপিঠের নাম প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় । সেখানে পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকে বিশ্বের সর্বাধিক মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা । আর বাংলাদেশী জাহিদ হাসান ঐখানে পড়ান । যার অধীনে পদার্থবিদগণ পিএইচডি নেন । তিনি সেখানে আইনস্টাইনের আলোর তড়িৎ ক্রিয়ায় ব্যবহৃত পদ্ধতি নিয়ে কাজ করলেন । আবিষ্কার করলেন এমন কিছু যেখানে ইলেকট্রন প্রায় ১০ হাজার গুণ বেশি গতিতে চলাচল করতে পারে । আর এটা পৃথিবীকে বদলে দেবার একটা নতুন দিগন্ত তাতে সন্দেহ নাই ।
♣ বাংলাদেশের আরেকটি ছেলে দখল করে রেখেছে বিশ্ব ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের অলরাউন্ডারের শীর্ষস্থান । তাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই । বাংলাদেশ আজ ক্রিকেটের এক পরাশক্তি ।
♣ বাংলাদেশেরই ছেলেরা বিশ্বের গণিত অলিম্পিয়াডে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে । সর্বশেষ ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বিশ্বের মধ্যে ৩৩তম আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম হয়েছে আমাদেরই একদল তরুণ-তরুণী ।
কয়েকটি উদাহরণ দিলাম । দেয়া যেত এমন উদাহরণ অনেক অনেক আছে । কিন্তু আপনারা স্ক্রল করবেন ভেবে আর ওই পথে পা বাড়াই নি । কাজের কোথায় আসা যাক । আমাদের সমাজে দুই প্রকারের লোক পাওয়া যায় জাতীয় সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ।
♣ এদের এক দল দেশের গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, চাদাবাজি হামলা, মামলা, অবিচার, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, দু:নির্বাচন, দুর্নীতি অন্যায় অবিচার নির্যাতন, দলীয় নৈরাজ্য নিয়া হতাশ । এই বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই কারণ এটাই ফ্যাক্ট ।
♣ আরেক দল সম্ভাবনার কথাই বেশি ভাবেন হয়ত । যদিও এই সংখ্যা এমন নয় যে গর্ব করে বলা যাবে । এরা কে সরকার সেটা না ভেবে নিজেদের কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ।
এদের বৃহৎ অংশ পৃথিবীর প্রায় ১৫৭টি দেশে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ লাখ কর্মরত আছেন, যাঁরা রেমিটেন্স হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ হাজার ১০০ কোটি (২১ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে শক্তিশালী করছেন ।
এরা থামছেই না । কোন সরকার গুম অপহরণে শীর্ষস্থান দখল করেছে কোন সরকার দুর্নীতিতে সেরা হয়েছে কি করছে না করছে সেটা নিয়ে কেবল ফেসবুকে নিজেদের স্টাটাস দিয়ে শেষ । হয়ত তারা জাতীয় সংগ্রামে অবদান রাখছে না ।
♣ আরেক দল দেশের সাইবার স্পেস নিয়ে কাজ করেন । এদের মধ্যে এক অংশ বহির্বিশ্বে অধিপথ্যের সাথে দেশের নামটা তুলে ধরতে পেরেছে । আরেক অংশ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে দেশের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে ধরছে । সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তির কান্ডারী হবার । যে দেশের ছেলে ইউটিউবে, পেপালের প্রতিষ্ঠায় থাকতে পারে তাদের না হবার কি আছে ।
♣ বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে হলে সরকারের দ্বায়িত্ব কোন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সেটা না বলে লেখাটা অপূর্ণ রাখবো কেন ? কেবল তরুনরা যদি ১৮ ঘন্টা কাজ করে তা হলেই দেশ উন্নত হবে এই কথা কে বলল । কেয়ামত হয়ে যাবে তার পরও এটা সম্ভব না । বর্তমান যে গতিতে দেশ এগুচ্ছে তাতে সরকারের ভূমিকা ১০০% এর মধ্যে মাত্র ৪০% । সরকার চাইলে দুর্নীতি কমিয়ে তথ্য প্রযুক্তিতে আরো দৃষ্টি দিতে পারে । বর্তমান আইটি বিষয়ক মন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক এ নিয়ে খুব কাজ করছেন, তরুনদের আগ্রহী করতে সময়উপযোগী বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন যা আমাদের আশা যোগায় আরো ভালো কিছু হবার । এ সরকারের মেয়াদেই সারাদেশে সাতটি আইটি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন সজিব ওয়াজেদ জয় ।
তবে মূল কাজটা কিন্তু তাদের হাতে না । দেশের আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশের নৈতিক উন্নয়ন, রাজনীতির আকাশে সুস্থ রাজনীতির সূচনা না হলে কখনোই আমরা উন্নত দেশ বলতে পারব মনে সে আশা জাগে না ।
সরকারেরও উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে । ২০২১ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে । বিশ্বব্যাঙ্ক প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, মানবসম্পদ উন্নয়ন থেকে শুরু করে সেবাখাত সহ স্বাস্থ্য, চিকিত্সা ও অর্থনীতি উন্নয়নের সমস্ত ইন্ডিকেটরে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য । বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদের শতকরা ৮৪ ভাগ মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারছে। এতে করে ডাইরিয়া ও কলেরার মতো এক সময়কার মরণব্যাধির উপদ্রব হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে
সার্ক উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) বেশ কিছু সূচকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানও বাংলাদেশের পেছনে আছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, জন্মহার, উন্নত পয়োনিষ্কাশন সুবিধাসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে এই দুটি দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো ।
♣ প্রাথমিক শিক্ষার হার যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। এদুটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৯৭৫ সালে । স্বল্পোন্নত থেকে মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হতে সময় নিয়েছে ৪০ বছর । অস্থির রাজনৈতিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় না থাকলে এ অর্জন আরও আগে সম্ভব ছিল ।
♣ দেশে নব্বইয়ের দশকে নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত কমতে শুরু করেছিল। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রায় ২ কোটি ১৪ লাখ মানুষ এদেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যায় যুক্ত হয়। তাদের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয়, কাজে লাগতে পেরেছে। সরকারের কাজ এখানেই ।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে ১.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৩ সালে যদিও দেশে সহিংসতা ও আত্মবিধ্বংসী ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল, তারপরও ২৪ শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে চতুর্থ । অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয় থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ পঞ্চম। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পও আন্তর্জাতিক মানের। পৃথিবীর এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) ৪৮ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ।
পোশাক শিল্পের তাবত বিশ্বে একটা বড় অংশ আমাদের, জাহাজ শিল্পেও একটা দারুন সম্ভাবনা আছে । মোটর শিল্পেও একটা সম্বাবনা ইঙ্গিত দিচ্ছে । তাহলে কি নেই ? কি নেই আমাদের জাতীয় উন্নয়নের ।
♣ গোল্ডম্যান স্যাক্স সম্ভাবনাময় ১১টি দেশের মধ্যে একটি নির্ভরযোগ্য তলিকায় উদীয়মান দেশ হিসাবে রয়েছে বাংলাদেশ। উক্ত সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটির বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যার বেশির ভাগই তরুণ। এদের মাধ্যমে দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়া সম্ভব ।
বাংলাদেশ কেন পারবে না ? কি নেই এ দেশে ? মেধা, মনন সবই আছে । জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াররা দেশের খাদ্য সমস্যা মেটাতে কাজ করছে । প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে । তরুণ মেধাবী গণিতবিদ, পদার্থবিদ, ইঞ্জিনিয়ার তৈরী হচ্ছে । আমাদের আছে সমৃদ্ধ এক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, সমাজব্যবস্থা । একটি সমৃদ্ধ জাতি হতে যা যা লাগে তার কি নেই আমাদের ?
বংগবন্ধু, জিয়া, রবিন্দ্রনাথ, নজরুল, একে ফজলুল হক, এম এ জি ওসমানি, ডক্টর ইউনুস এরা তো আমাদের দেশেরই নাকি । আমাদের সততা আছে, মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় নিকট দেশপ্রেমের ইতিহাস আছে । আছে দিনরাত পরিশ্রমের মানসিকতা । বিশ্ব শান্তি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ।
আমাদের যেটা করতে হবে সেটা আহামরি কঠিন কিছু নয় । মতভেদ নিয়ে হাংগামা অফ করে অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধ্যা রেখে যার যার কাজ ঠিকমত করলেই হলো । দয়া করে রাজাকার vs নাস্তিক / অমুক চেতনা vs তমুক চেতনা সংক্রান্ত লড়াই অফ কর ভাইরা আমার (!) হাতজোর করছি । আর না ।
একটা কৌতুক পড়েছিলাম নরকে সমগ্র পাপী মানবজাতিকে আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়া হচ্ছে কেবল বাঙালিদের ছাড়া । এন্জেলকে প্রশ্ন করা হলে উত্তর দিলেন বাঙালিরা নাকি এক একজন আরেকজনের পুটকিতে আঙ্গুল দিয়া রাখে আর হানাহানি করে নিজেরাই এক একটা নরক তৈরী করে রেখেছে । অভিযোগ হলো আমরা কখনই এক হতে পারি না । ইতিহাস ঘেটে দেখতে বলব । সেই প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের ঐক্যের কথা । কেবল পলাশীর সময়টা আর বর্তমানের সময়টা বাদ দিলে এই কৌতুক মিথ্যে হতে বাধ্য । একাত্তর বায়ান্ন তো বেশিদিন আগের কথা নয় । ক্রিকেট আমাদের দেশের সব ভেদাভেদ ভেঙ্গে এক করে দিতে পারলে জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেন সে আশা থাকবে না ??
আপনি জানেন ? এই মামা আব্দুল হালিম আমাদের দেশেরই সন্তান ।
♣ অধুনা পদার্থবিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন যেখানে কাজ করতেন, নিক্লিয়ার ফিজিক্সের ওপেনহেইমার, এটম মডেলের নিলস বোর যেখানে কাজ করতেন সেই বিদ্যাপিঠের নাম প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় । সেখানে পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকে বিশ্বের সর্বাধিক মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা । আর বাংলাদেশী জাহিদ হাসান ঐখানে পড়ান । যার অধীনে পদার্থবিদগণ পিএইচডি নেন । তিনি সেখানে আইনস্টাইনের আলোর তড়িৎ ক্রিয়ায় ব্যবহৃত পদ্ধতি নিয়ে কাজ করলেন । আবিষ্কার করলেন এমন কিছু যেখানে ইলেকট্রন প্রায় ১০ হাজার গুণ বেশি গতিতে চলাচল করতে পারে । আর এটা পৃথিবীকে বদলে দেবার একটা নতুন দিগন্ত তাতে সন্দেহ নাই ।
♣ বাংলাদেশের আরেকটি ছেলে দখল করে রেখেছে বিশ্ব ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের অলরাউন্ডারের শীর্ষস্থান । তাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই । বাংলাদেশ আজ ক্রিকেটের এক পরাশক্তি ।
♣ বাংলাদেশেরই ছেলেরা বিশ্বের গণিত অলিম্পিয়াডে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে । সর্বশেষ ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বিশ্বের মধ্যে ৩৩তম আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম হয়েছে আমাদেরই একদল তরুণ-তরুণী ।
কয়েকটি উদাহরণ দিলাম । দেয়া যেত এমন উদাহরণ অনেক অনেক আছে । কিন্তু আপনারা স্ক্রল করবেন ভেবে আর ওই পথে পা বাড়াই নি । কাজের কোথায় আসা যাক । আমাদের সমাজে দুই প্রকারের লোক পাওয়া যায় জাতীয় সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ।
♣ এদের এক দল দেশের গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, চাদাবাজি হামলা, মামলা, অবিচার, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, দু:নির্বাচন, দুর্নীতি অন্যায় অবিচার নির্যাতন, দলীয় নৈরাজ্য নিয়া হতাশ । এই বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই কারণ এটাই ফ্যাক্ট ।
♣ আরেক দল সম্ভাবনার কথাই বেশি ভাবেন হয়ত । যদিও এই সংখ্যা এমন নয় যে গর্ব করে বলা যাবে । এরা কে সরকার সেটা না ভেবে নিজেদের কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ।
এদের বৃহৎ অংশ পৃথিবীর প্রায় ১৫৭টি দেশে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ লাখ কর্মরত আছেন, যাঁরা রেমিটেন্স হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ হাজার ১০০ কোটি (২১ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে শক্তিশালী করছেন ।
এরা থামছেই না । কোন সরকার গুম অপহরণে শীর্ষস্থান দখল করেছে কোন সরকার দুর্নীতিতে সেরা হয়েছে কি করছে না করছে সেটা নিয়ে কেবল ফেসবুকে নিজেদের স্টাটাস দিয়ে শেষ । হয়ত তারা জাতীয় সংগ্রামে অবদান রাখছে না ।
♣ আরেক দল দেশের সাইবার স্পেস নিয়ে কাজ করেন । এদের মধ্যে এক অংশ বহির্বিশ্বে অধিপথ্যের সাথে দেশের নামটা তুলে ধরতে পেরেছে । আরেক অংশ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে দেশের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে ধরছে । সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তির কান্ডারী হবার । যে দেশের ছেলে ইউটিউবে, পেপালের প্রতিষ্ঠায় থাকতে পারে তাদের না হবার কি আছে ।
♣ বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে হলে সরকারের দ্বায়িত্ব কোন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সেটা না বলে লেখাটা অপূর্ণ রাখবো কেন ? কেবল তরুনরা যদি ১৮ ঘন্টা কাজ করে তা হলেই দেশ উন্নত হবে এই কথা কে বলল । কেয়ামত হয়ে যাবে তার পরও এটা সম্ভব না । বর্তমান যে গতিতে দেশ এগুচ্ছে তাতে সরকারের ভূমিকা ১০০% এর মধ্যে মাত্র ৪০% । সরকার চাইলে দুর্নীতি কমিয়ে তথ্য প্রযুক্তিতে আরো দৃষ্টি দিতে পারে । বর্তমান আইটি বিষয়ক মন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক এ নিয়ে খুব কাজ করছেন, তরুনদের আগ্রহী করতে সময়উপযোগী বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন যা আমাদের আশা যোগায় আরো ভালো কিছু হবার । এ সরকারের মেয়াদেই সারাদেশে সাতটি আইটি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন সজিব ওয়াজেদ জয় ।
তবে মূল কাজটা কিন্তু তাদের হাতে না । দেশের আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশের নৈতিক উন্নয়ন, রাজনীতির আকাশে সুস্থ রাজনীতির সূচনা না হলে কখনোই আমরা উন্নত দেশ বলতে পারব মনে সে আশা জাগে না ।
সরকারেরও উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে । ২০২১ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে । বিশ্বব্যাঙ্ক প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, মানবসম্পদ উন্নয়ন থেকে শুরু করে সেবাখাত সহ স্বাস্থ্য, চিকিত্সা ও অর্থনীতি উন্নয়নের সমস্ত ইন্ডিকেটরে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য । বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদের শতকরা ৮৪ ভাগ মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারছে। এতে করে ডাইরিয়া ও কলেরার মতো এক সময়কার মরণব্যাধির উপদ্রব হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে
সার্ক উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) বেশ কিছু সূচকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানও বাংলাদেশের পেছনে আছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, জন্মহার, উন্নত পয়োনিষ্কাশন সুবিধাসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে এই দুটি দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো ।
♣ প্রাথমিক শিক্ষার হার যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। এদুটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৯৭৫ সালে । স্বল্পোন্নত থেকে মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হতে সময় নিয়েছে ৪০ বছর । অস্থির রাজনৈতিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় না থাকলে এ অর্জন আরও আগে সম্ভব ছিল ।
♣ দেশে নব্বইয়ের দশকে নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত কমতে শুরু করেছিল। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রায় ২ কোটি ১৪ লাখ মানুষ এদেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যায় যুক্ত হয়। তাদের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয়, কাজে লাগতে পেরেছে। সরকারের কাজ এখানেই ।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে ১.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৩ সালে যদিও দেশে সহিংসতা ও আত্মবিধ্বংসী ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল, তারপরও ২৪ শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে চতুর্থ । অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয় থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ পঞ্চম। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পও আন্তর্জাতিক মানের। পৃথিবীর এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) ৪৮ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ।
পোশাক শিল্পের তাবত বিশ্বে একটা বড় অংশ আমাদের, জাহাজ শিল্পেও একটা দারুন সম্ভাবনা আছে । মোটর শিল্পেও একটা সম্বাবনা ইঙ্গিত দিচ্ছে । তাহলে কি নেই ? কি নেই আমাদের জাতীয় উন্নয়নের ।
♣ গোল্ডম্যান স্যাক্স সম্ভাবনাময় ১১টি দেশের মধ্যে একটি নির্ভরযোগ্য তলিকায় উদীয়মান দেশ হিসাবে রয়েছে বাংলাদেশ। উক্ত সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটির বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যার বেশির ভাগই তরুণ। এদের মাধ্যমে দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়া সম্ভব ।
বাংলাদেশ কেন পারবে না ? কি নেই এ দেশে ? মেধা, মনন সবই আছে । জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াররা দেশের খাদ্য সমস্যা মেটাতে কাজ করছে । প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে । তরুণ মেধাবী গণিতবিদ, পদার্থবিদ, ইঞ্জিনিয়ার তৈরী হচ্ছে । আমাদের আছে সমৃদ্ধ এক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, সমাজব্যবস্থা । একটি সমৃদ্ধ জাতি হতে যা যা লাগে তার কি নেই আমাদের ?
বংগবন্ধু, জিয়া, রবিন্দ্রনাথ, নজরুল, একে ফজলুল হক, এম এ জি ওসমানি, ডক্টর ইউনুস এরা তো আমাদের দেশেরই নাকি । আমাদের সততা আছে, মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় নিকট দেশপ্রেমের ইতিহাস আছে । আছে দিনরাত পরিশ্রমের মানসিকতা । বিশ্ব শান্তি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ।
আমাদের যেটা করতে হবে সেটা আহামরি কঠিন কিছু নয় । মতভেদ নিয়ে হাংগামা অফ করে অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধ্যা রেখে যার যার কাজ ঠিকমত করলেই হলো । দয়া করে রাজাকার vs নাস্তিক / অমুক চেতনা vs তমুক চেতনা সংক্রান্ত লড়াই অফ কর ভাইরা আমার (!) হাতজোর করছি । আর না ।
একটা কৌতুক পড়েছিলাম নরকে সমগ্র পাপী মানবজাতিকে আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়া হচ্ছে কেবল বাঙালিদের ছাড়া । এন্জেলকে প্রশ্ন করা হলে উত্তর দিলেন বাঙালিরা নাকি এক একজন আরেকজনের পুটকিতে আঙ্গুল দিয়া রাখে আর হানাহানি করে নিজেরাই এক একটা নরক তৈরী করে রেখেছে । অভিযোগ হলো আমরা কখনই এক হতে পারি না । ইতিহাস ঘেটে দেখতে বলব । সেই প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের ঐক্যের কথা । কেবল পলাশীর সময়টা আর বর্তমানের সময়টা বাদ দিলে এই কৌতুক মিথ্যে হতে বাধ্য । একাত্তর বায়ান্ন তো বেশিদিন আগের কথা নয় । ক্রিকেট আমাদের দেশের সব ভেদাভেদ ভেঙ্গে এক করে দিতে পারলে জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেন সে আশা থাকবে না ??
0 টি তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন